রাজ্য SIR-এ ৪৩ লক্ষ নাম বাতিল! খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের আগেই। আপনার নাম বাদ যায়নি তো?
সাতদিন পিছিয়ে দিল খসড়া বা ড্রাফট ভোটার লিস্ট প্রকাশের তারিখ। নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ভোটারকারীদের নাম বাতিল করা হয়েছে। কেন বাদ গেল এত নাম?

ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছে SIR (Special Intensive Revision)-এর ফর্ম ফিলাপ। বর্তমানে BLO-রা ফর্ম ডিজিটাইজেশন ও আপলোড প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। এর মধ্যেই ইলেকশন কমিশন বড় তথ্য প্রকাশ করল। সাতদিন পিছিয়ে দিল খসড়া বা ড্রাফট ভোটার লিস্ট প্রকাশের তারিখ।
নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ভোটারকারীদের নাম বাতিল করা হয়েছে। কেন বাদ গেল এত নাম? জানা যাচ্ছে- ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ভোটারকারীদের মধ্যে, মৃত ভোটারের সংখ্যাই ২১ লাখ ৪৫ হাজার। ৫ লাখ ৫৩ হাজার ভোটার নিখোঁজ। ভোটার ট্রান্সফার হয়েছে ১৫ লাখ ১৩ হাজার মতো। তাছাড়াও, ৯৮ হাজার ৬০০ ভোট সম্পূর্ণরূপে ভুয়ো বলে চিহ্নিত করা গেছে।
ইলেকশন কমিশন তরফে আরও জানা গেছে, প্রায় ৭ হাজার বুথের আপলোড হওয়া এসআইআরের তথ্য নিয়ে মনে খটকার পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। গত সোমবার (০১লা ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ) কমিশন জানিয়েছে, BLO-রা যে তথ্য অনলাইনে আপলোড করেছে, তা অনুযায়ী রাজ্যের ২২০৮টি বুথে ১টিও আনকালেক্টেবল (Uncollectible) বা অসংগৃহীত এসআইআর ফর্ম নেই।
এর মানে ওই সমস্ত বুথে, যদি ১০০০টা এসআইআর ফর্ম BLO-রা বিলি করে থাকেন, তাহলে ১০০০টা SIR ফর্মই জমা পড়েছে। মানে একজন ভোটারেরও মারা যাননি, কেউ নিখোঁজ হননি বা ভোটার ট্রান্সফার করেননি। যা কার্যত অসম্ভব। এমনটাই মনে করছে ইলেকশন কমিশন।
কোন জেলাগুলিতে এরকম ঘটনা বেশি?
যে সমস্ত বুথগুলিতে এই আনকালেক্টেবল ফর্ম নেই, তারমধ্যে যে সমস্ত এলাকা পড়ছে-
- দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় এরকম বুথের সংখ্যা মোট ৬০৮টি, যা সবথেকে বেশি।
- পুরুলিয়া জেলা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। এখানে এরকম ২২৮টি বুথ রয়েছে।
- মুর্শিদাবাদ জেলায় ২২৬টি বুথ।
- মালদহ জেলায় ২১৬টি বুথ।
- নদিয়া জেলায় ১৩০টি বুথ।
- বাঁকুড়া জেলায় ১০১টি বুথ।
কোন এলাকায় এরকম ঘটনা বেশি?
কমিশন সূত্রে এখনও পর্যন্ত যা জানা গেছে, আনকালেক্টেবল ফর্ম পাওয়া যায়নি এমন লিস্টে প্রথম স্থানে রয়েছে দক্ষিণ কলকাতা। ১৯.৩৮ শতাংশ। এরপরে, উত্তর কলকাতায় রয়েছে ১৯.১২%।
ডিজিটাইজেশনের কথা বলতে গেলে, সবথেকে বেশি ডিজিটাইজেশন (Digitization) হয়েছে বসিরহাট উত্তরে, মোট ৯৬.০৫%। ভাটাপাড়ায়, ৭৪.০৯% যা সবথেকে কম সংখ্যক ডিজিটাইজেশন।
ব্যারাকপুরে সবথেকে বেশি আনকালেক্টেবল ফর্ম, যা ১৫.৬২ শতাংশ। বসিরহাটে উতরে সব চাইতে কম আনকালেক্টেবল ফর্ম, ৩.৩৭ শতাংশ।
ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন এদিন আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, BLO (Booth Level Officer) এবং ERO (Electoral Registration Officer)-দের জন্য। এনুমারেশন ফর্মের ভুল এন্ট্রি সংশোধনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। কমিশন জানিয়েছে ভোটারদের তথ্য অনলাইনে এন্ট্রি করার সময় কোন ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকলে-এবার তা সংশোধন বা সঠিক করা যাবে। যেহুতু এসআইআরের জন্য বেশি সময় পাওয়া যাচ্ছে, সে সময়ের মধ্যেই এই ভুল সংশোধনের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে।

